বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় সিউল স্টক এক্সচেঞ্জে একজন ব্রোকারের প্রতিক্রিয়া
এপি
সুদের হার নিচু পর্যায়ে রাখার মানে হলো, ফেডারেল রিজার্ভ খুব স্বল্প সুদে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়া। বর্তমানে এই হার শূন্য থেকে দশমিক ২৫ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
মঙ্গলবারের ঘোষণায় নিচু পর্যায়ে ধরে রাখা বলতে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার উল্লিখিত সীমার বাইরে নিয়ে যাবে বলে বোঝাতে চেয়েছে।
মঙ্গলবার যখন এই ঘোষণাটি আসে, তখন আটলান্টিকের এপারে ইউরোপ ও প্রশান্ত মহাসাগরের ওপারে এশিয়া ঘুমিয়ে পড়েছে।
আর তাই ফেডারেল রিজার্ভের এই ঘোষণার তাৎক্ষণিক প্রভাবটা পড়েছে তাদেরই আর্থিক বাজারে বিশেষত ওয়ালস্ট্রিটে। মঙ্গলবার ওয়ালস্ট্রিটে ডাও জোনস সূচক প্রায় চার শতাংশ বা ৪২৯ পয়েন্ট বেড়ে দিন শেষ করেছে। ফলে ডাও জোনস আবার ১১ হাজার পয়েন্টের ওপরে উঠে যায়।
এর জের ধরে গতকাল বুধবার প্রথমে এশিয়া, তারপর ইউরোপের শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়ায়। সূর্যোদয়ের দেশ জাপানের টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক নিক্কি এক দশমিক ১০ শতাংশ বেড়ে ৯ হাজার পয়েন্টের ওপরে গিয়ে শেষ হয়েছে।
হংকং ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধান বাজারগুলো গড়ে সোয়া দুই শতাংশের বেশি হারে বেড়েছে। এ ছাড়া সাংহাই, সিউল, জাকার্তা ও মুম্বাই ঊর্ধ্বমুখী ধারা নিয়ে দিন শেষ করেছে।
এশিয়ায় যখন মধ্য দুপুর, তখন ইউরোপের বাজার দিনের যাত্রা শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছে একটা ইতিবাচক সংবাদ সঙ্গী করে। আর তাই ফ্রাঙ্কফুর্ট স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক বাজারদর বেড়েছে প্রায় আড়াই শতাংশ। পাশাপাশি লন্ডনের এফটিএসই-১০০ সূচক প্রায় দেড় শতাংশ আর প্যারিসের ক্যাক সূচক সোয়া এক শতাংশ বেড়েছে।
অনেকেই মনে করছেন, সুদের হারে কোনো পরিবর্তন না আনার ঘোষণার মধ্য দিযে পুঁজিবাজারে এই বার্তাই দেওয়া হয়েছে যে এখান থেকে তহবিল অন্যত্র স্থানান্তর করে খুব একটা লাভ হবে না। তবে বেশির ভাগ বিশ্লেষকই বলছেন যে এটা নেহাতই খণ্ডিত ধারণা। কেননা, সুদের হার নিম্নতম পর্যায়ে অপরিবর্তিত রাখার ঘোষণার মধ্য দিয়ে আমেরিকা স্বীকার করে নিল যে তাদের অর্থনীতির মন্দাদশা কার্যত অব্যাহত রয়েছে। দেশটির আবাসন খাতে স্থবিরতা চলছে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হারও খুব শ্লথ আর মানুষের খরচও কমেছে।
বরং গত কয়েক দিনে অব্যাহত দরপতনের পর বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর একটা প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। ফেডারেল রিজার্ভের ঘোষণা সেই প্রয়োজনীয়তাকে সমর্থন দিয়ে সাময়িক স্বস্তি এনেছে।
অবশ্য গতকালই খবর আসে যে জুলাই মাসে চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে তিন হাজার ১৫০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। জুন মাসে এই উদ্বৃত্ত ছিল দুই হাজার ২৩০ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক মাসে চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত বেড়েছে ৪১ শতাংশেরও বেশি।
এর মধ্য দিয়ে এ রকম একটা আভাসও মিলল যে বিশ্ব অর্থনীতি যতটা নাজুক হয়ে গেছে বলে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন, বাস্তবে ততটা নাজুক হয়নি।
তবে উচ্চ বাণিজ্য উদ্বৃত্ত চীনা মুদ্রা ইউয়ানের দর ঊর্ধ্বমুখী পুনর্মূল্যায়নের চাপ তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। [সূত্র: বিবিসি ও এফটি]
Posted in: বাংলাদেশ-বহির্বিশ্ব,শেয়ার বাজার
0 comments:
Post a Comment