Feedjit Live

This is default featured post 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured post 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured post 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured post 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured post 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

Thursday, June 30, 2011

১১ বছরে বরাদ্দ বেড়েছে তিন গুণ, ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি

১১ বছরে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাজেট প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। ২০০১-০২ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল প্রায় চার হাজার কোটি টাকা, তা ২০১১-১২ অর্থবছরে এসে দাঁড়াবে ১২ হাজার কোটি টাকায়, যা মোট বাজেটের ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
গতকাল বুধবার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্কুল আয়োজিত বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাজেট-সংক্রান্ত এক সংলাপের মূল প্রবন্ধে এ তথ্য দেওয়া হয়।
সংলাপে অংশ নেওয়া প্রায় সব বক্তাই সশস্ত্র বাহিনীর জন্য এই অর্থ বরাদ্দ ও ব্যয়ে স্বচ্ছতা থাকা উচিত বলে মত দিয়েছেন।
তবে সশস্ত্র বাহিনীর বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশে সশস্ত্র বাহিনীর জন্য বাজেটের বরাদ্দ খুবই অপর্যাপ্ত।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি এ কে আজাদ এই বিপুল অঙ্কের প্রতিরক্ষা বাজেটের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমার মোট আয়ের ৬২ শতাংশ চলে যায় কর দিতে। আর সেই করের টাকার বাজেটের ৭ দশমিক ৩ শতাংশ বরাদ্দ পায় সেনাবাহিনী। আর কৃষিতে বরাদ্দ পায় ৭ দশমিক ১ শতাংশ। কৃষির বরাদ্দ কীভাবে খরচ হচ্ছে, এর ফল কী আসছে, তার সবই দেখতে পাই। কিন্তু সশস্ত্র বাহিনীতে বরাদ্দ দেওয়ার কোনো ফল দেখতে পাই না।’
এ কে আজাদ বলেন, সেনাবাহিনী রাস্তা তৈরি করছে, উন্নয়নকাজে অংশ নিচ্ছে। তার জন্য জাতীয় বাজেটের উল্লেখযোগ্য অংশ বরাদ্দের দরকার আছে কি না, তা আলোচনা হওয়া উচিত।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ‘প্রতিরক্ষার বিষয়গুলোতে সব দেশেই গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়। তবু আমাদের দেশে প্রতিরক্ষা বাজেট নিয়ে প্রতিরক্ষা কমিটির সামনে আলোচনা হয়। প্রতিবছরই প্রতিরক্ষার বরাদ্দ ও ব্যয়ের ওপর নিরীক্ষা হয়। নিরীক্ষা প্রতিবেদন সংসদীয় কমিটির কাছে যায়। সরকারের অন্যান্য সংস্থার আয়-ব্যয়ের প্রতিবেদন যতটুকু প্রকাশ করা হয়, সশস্ত্র বাহিনীর আয়-ব্যয়ও ততটুকু প্রকাশিত হয়।
সংলাপ অনুষ্ঠানের সভাপতি ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক মাহবুব হোসেন বলেন, কোনো কিছু চাপা থাকলে অনেক প্রশ্ন ওঠে। তাই বিষয়গুলোর খোলামেলা আলোচনা ভালো। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেরও গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বাড়ানো উচিত।
অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর ইশফাক ইলাহি চৌধুরী ‘বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাজেট’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তাতে বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা বাজেটের তুলনামূলক পর্যালোচনা তুলে ধরে বলা হয়, অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এ খাতে বাজেট বরাদ্দ অনেক কম।
প্রবন্ধে বলা হয়, বাজেট বৃদ্ধি মানেই মানসম্মত বাহিনী নয়। প্রতিরক্ষা বরাদ্দ বৃদ্ধির ভালো ফল হলো দেশে শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি, কাজের সুযোগ তৈরিসহ অর্থনীতির গতিবৃদ্ধি। অন্যদিকে এর ফলে অর্থনীতিতে বোঝাও তৈরি হয়। দরিদ্র দেশ থেকে ধনী দেশগুলোতে সম্পদ চলে যায় এবং এটি গণতন্ত্রের জন্যও হুমকিস্বরূপ।
সাবেক সেনাপ্রধান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর বাজেটের উল্লেখযোগ্য অংশ চলে যায় বেতন-ভাতা, পেনশন, রেশন ইত্যাদিতে। তাই বাহিনীর উন্নয়নের জন্য এই প্রতিরক্ষা বাজেট খুবই অপর্যাপ্ত।
পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর বিষয়গুলো এখনো আলোচনার ঊর্ধ্বে। জাতীয় বাজেটে পরিষ্কারভাবে বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয় না। তিনি বলেন, ‘বলা হচ্ছে, শত্রুর মোকাবিলার জন্য প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দের প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের জন্য হুমকি কারা, এরা কী অভ্যন্তরীণ, না বহিঃশত্রু, তা স্পষ্ট নয়। বহুতল ভবনের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র আগে, নাকি সামরিক ট্যাংক আগে কেনা হবে—বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে। প্রথাগত যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়া কতটা বাস্তবসম্মত, তার খোলামেলা আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।’
সেনাবাহিনীর বাজেট শাখার পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, সেনাবাহিনীর কোনো কিছুই গোপন নয়। যথাযথ দায়িত্বপ্রাপ্ত যে কেউ এর বরাদ্দ ও খরচের বিষয়ে জানতে পারেন। তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর মোট বরাদ্দের মধ্যে সেনাবাহিনী পেয়েছে ৫২ থেকে ৫৩ শতাংশ, বিমানবাহিনী ১৩ দশমিক ৫২ শতাংশ, নৌবাহিনী ১১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বাকিটা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে (ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, ক্যাডেট কলেজ এবং এ ধরনের প্রতিষ্ঠান) ব্যয় হয়।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, সেনাবাহিনীর মোট বরাদ্দের ৫৮ শতাংশ খরচ হয় বেতন ও অন্যান্য ভাতা বাবদ, ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ সরবরাহ ও সেবা খাতে, ১ দশমিক ৮ শতাংশ মেরামত খাতে, ২১ দশমিক ৭২ শতাংশ সামরিক উপকরণ সংগ্রহ এবং দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ কল্যাণ খাতে ব্যয় হয়।
সদ্য অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল জহির বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার জন্যও বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতা করতে হয়। এ জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষিত জনবল ও সর্বাধুনিক সরঞ্জাম। আর এর জন্য চলতি বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল।
এ প্রসঙ্গে সাবেক সেনাপ্রধান মাহবুবুর রহমান বলেন, সশস্ত্র বাহিনীকে শুধু জাতিসংঘ মিশনে অংশগ্রহণ নয়, দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
প্রাণ গ্রুপের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আমজাদ খান চৌধুরী বলেন, সেনাবাহিনীর বিষয়গুলো সেই পাকিস্তান আমল থেকেই ‘অতি সংবেদনশীল’ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই চিত্রের পরিবর্তন আনতে হবে।
মেজর জেনারেল (অব.) রেজা নূর বলেন, ‘উপযুক্ত বরাদ্দের অভাবে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আধুনিক ও পর্যাপ্ত সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে পারছে না।’
রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর জন্য এত অর্থ খরচের ফল কী হচ্ছে, তা যদি মানুষ জানতে পারে, তাহলে তারা বিষয়টি মানবে।
চার্টার্ড অ্যাকাউনটেন্ট নেছারউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘গরিব দেশ হিসেবে এটা অনেক বড় বরাদ্দ। আমাদের কষ্টের এই টাকা কীভাবে খরচ হচ্ছে, আমরা তা জানি না।’
সংলাপের সূচনা বক্তব্য দেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মামুন রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আইনুন নিশাত উপস্থিত ছিলেন।

বাজেটে পুঁজিবাজার-সম্পর্কিত পদক্ষেপ শিল্পোন্নয়নে গতি বাড়াবে


undefined
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সভাপতি শাকিল রিজভী বলেছেন, ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজার-সম্পর্কিত বিভিন্ন পদক্ষেপ দেশের শিল্পোন্নয়নে গতি বৃদ্ধি করবে। একই সঙ্গে রপ্তানি-বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি সাধিত হবে এবং ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন সহজতর হবে।
আজ বৃহস্পতিবার ডিএসইর কার্যালয়ে আয়োজিত বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় শাকিল রিজভী এ কথা বলেন।
বাজেটে পুঁজিবাজার সম্পর্কে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান শাকিল রিজভী।
বাজেটে বন্ডের পাশাপাশি শেয়ারবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারে শাকিল রিজভী বলেন, এতে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে বাজার যাতে আবার অতিমূল্যায়িত না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা হবে বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে চাহিদার পাশাপাশি শেয়ার সরবরাহ যাতে বাড়ে, সে বিষয়টিও নজরে রাখা হবে বলে শাকিল রিজভী জানান।
লিখিত বক্তব্যে শাকিল রিজভী বলেন, ‘এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শেয়ার ছাড়ার মাধ্যমে পুঁজিবাজার আরও শক্তিশালী করা। তাই খুব দ্রুততার সঙ্গে সরকারের হাতে থাকা বিভিন্ন লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারসহ দেশি-বিদেশি বড় বড় কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে অফলোড করে চাহিদার সঙ্গে সরবরাহের সমন্বয় করা।’
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসইর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আহসানুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার অত্যন্ত স্পর্শকাতর জায়গা। সুতরাং এটা নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলকে রাজনীতি না করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ী আমাদের আসল পরিচয়। পুঁজিবাজার রাজনীতির উপাদান না হয়ে অর্থনৈতিক ক্ষেত্র হিসেবে যাতে কাজ করতে পারে, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই এটাকে যেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করা হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে ডিএসইর পরিচালক আহমেদ রশিদ লালী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সতিপতী মৈত্র, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) মো. জহুরুল আলম উপস্থিত ছিলে


প্রথম আলো

কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগে পুঁজিবাজার চাঙা


আগামী ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ায় অনেক বিনিয়োগকারী আবারও বাজারে সক্রিয় হয়েছেন। এর প্রভাবে গতকাল দুই স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক ও লেনদেন বেড়েছে।
তবে ১০ শতাংশ কর দিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার বিষয়টিকে অনৈতিক হিসেবেও উল্লেখ করেছেন অনেকে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে লেনদেন শুরু হয়। পাঁচ মিনিটের মাথায় ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক ১৩৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়। দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে সূচক সর্বোচ্চ ১৪৩ পয়েন্ট বাড়ে। এরপর সূচক সামান্য কমলেও দিন শেষে ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ৬৮ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩৮ দশমিক ৬৬ পয়েন্টে দাঁড়ায়।
ডিএসইতে হাতবদল হওয়া ২৫৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ২০৫টির, কমেছে ৪৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। স্টক এক্সচেঞ্জটিতে আজ ৯৩৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা গতকালের চেয়ে ১৬৬ কোটি টাকা বেশি।
ডিএসইর পরিচালক আহমেদ রশিদ লালী পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাঁর মতে, এই টাকা বাজারে তারল্য সংকট দূর করতে সহায়কশক্তি হিসেবে কাজ করবে। বাজার স্থিতিশীলতার দিকে এগোবে। আর ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে এই টাকা লেনদেন হওয়ায় মুদ্রাবাজারেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এতে করে বাজার আবার অতিমূল্যায়িত হবে কি না—প্রশ্নের উত্তরে আহমেদ রশিদ বলেন, ডিএসই এ বিষয়ে সতর্ক নজর রাখছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছি। বাজারে যাতে শেয়ারের সরবরাহ বাড়ে, সে ব্যাপারে এসইসির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমি আশাবাদী, তিন-চার মাসের মধ্যে নতুন করে আইপিও আসা শুরু হবে।’
অবশ্য পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক সালাহউদ্দিন আহমেদ খান কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেননি। তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টি ভালো চোখে দেখছি না। সাধারণ লোক যেখানে ২৫ শতাংশ কর দিয়ে থাকেন, সেখানে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ অনৈতিক।’
তাঁর মতে, সরকারকে প্রথমেই দেশের সার্বিক তারল্য সংকটের দিকে নজর দিতে হবে। কিছু লোক সুযোগ নেওয়ার জন্য এই চেষ্টা করছে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষে থাকা ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে—আফতাব অটো, ইউসিবিএল, এমজেএল বাংলাদেশ লিমিটেড, বেক্সিমকো, এমআই সিমেন্ট, মেঘনা লাইফ ইনস্যুরেন্স, লঙ্কা-বাংলা ফাইন্যান্স, এনবিএল ও ওয়ান ব্যাংক।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ১৯২ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে ১৬ হাজার ৮৭৬ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৯৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৩টির, কমেছে ২৭টির ও দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের। স্টক এক্সচেঞ্জটিতে ৯৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা গতকালের চেয়ে এক কোটি টাকা বেশি।

Monday, June 27, 2011

ছয় কোটি টাকা আত্মসাৎ


জাপানি অধ্যাপক আজুমার সঙ্গে দারাদ আহমেদ (বাঁয়ে)
ফাইল ছবি
‘জাপান-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ করার নামে জাপানি এক অধ্যাপকের কাছ থেকে সাড়ে ছয় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এক বাংলাদেশি। রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশপ্রেমী ওই জাপানি অধ্যাপক প্রতারণার এ ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন।
সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করার নামে প্রতারণা করেছেন দারাদ আহমেদ নামের এক বাংলাদেশি। নিজেকে তিনি রবীন্দ্রগবেষক ও বিশ্বভারতীর ছাত্র হিসেবে পরিচয় দিতেন। তাঁর বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায়।
জাপানের প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন, অধ্যাপক কাযুও আজুমা জাপানে রবীন্দ্রগবেষক এবং বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিপ্রেমী হিসেবে পরিচিত। নিজের একক প্রচেষ্টায় জাপান থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তিনি কলকাতায় ‘ভারত-জাপান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ করেছেন। বিশ্বভারতীতে ‘নিপ্পন ভবন’ তৈরিতেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। ভারতের এ দুই প্রতিষ্ঠান জাপান-ভারত সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আজুমার স্ত্রী কেইকো আজুমাও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির গবেষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক।
কেইকো আজুমা কিছুদিন আগে প্রথম আলোর টোকিও কার্যালয়ে চিঠি লিখে প্রতারণার বিষয়টি জানিয়েছেন। কেইকো জানান, ২০০৩ সালে কলকাতা সফরের সময় তাঁর সঙ্গে পরিচিত হন দারাদ আহমেদ নামের এক বাংলাদেশি। তিনি নিজেকে বিশ্বভারতীর সংগীতে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ছাত্র হিসেবে পরিচয় দেন এবং বলেন, এর আগে কিছুদিন তিনি নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায়ও সাংবাদিকতা করেছেন। দারাদ দাবি করেন, তাঁর মা-ও একজন রবীন্দ্রভক্ত। পেশায় তিনি মস্তিষ্কের শল্যচিকিৎসক (সার্জন) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় কাজ করেন। এ কারণেই পেশাগত দায়িত্বে তাঁকে সারা বিশ্ব ঘুরে বেড়াতে হয়।
কেইকো জানান, ভারতের মতো বাংলাদেশেও একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করার ইচ্ছা তাঁদের ছিল। দারাদের এসব কথায় আজুমা ও তাঁর মনে হয়েছে, বাংলাদেশে তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে হলে এর চেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি তো আর অন্য কেউ হতে পারে না। এদিকে কলকাতা থেকে জাপানে ফেরার পর দারাদ এ বিষয়ে অনেকগুলো চিঠি লেখেন। একপর্যায়ে দারাদের মা-ও চিঠি লিখতে থাকেন।
আজুমার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দারাদ ২০০৪ সালে জাপানে চলে আসেন এবং তাঁর চেয়ে ২০ বছরের বড় এক জাপানি রমণীকে বিয়ে করেন। আজুমার পরিবারের সহায়তায় তিনি জাপানে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি জোগাড় করেন। একপর্যায়ে দারাদ তাঁকে ‘জাপান-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ করার পরামর্শ দেন। দারাদ বলেন, তিনি প্রকল্পের সব দেখভাল করবেন। আজুমাকে শুধু অর্থ সংগ্রহ করতে হবে।
কেইকো জানান, ‘দারাদ তাঁকে বিষয়টি গোপন রাখার এবং আর কোনো বাংলাদেশিকে এ ব্যাপারে সম্পৃক্ত না করার অনুরোধ জানান। দারাদ তাঁকে বোঝান, সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি ঢাকা শহরে নয়, বরং রবীন্দ্রনাথের দেখিয়ে দেওয়া পথ অনুসরণ করে মফস্বলের কোথাও তৈরি করা উচিত। আর তিনি যেহেতু সাইফুর রহমানের (প্রয়াত অর্থমন্ত্রী) নিকটাত্মীয়, ফলে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় তাঁর নিজ গ্রাম হবে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরির সবচেয়ে জুতসই জায়গা।
আজুমা জানান, দেশে ফিরে দারাদ ও তাঁর মা বিরামহীনভাবে অর্থের জন্য তাগিদ দিতে থাকেন। তিনিও টাকা দিতে থাকেন। একপর্যায়ে দারাদ ও তাঁর মা আজুমা দম্পতিকে আমন্ত্রণ জানান মৌলভীবাজারের বড়লেখায়। সেখানে একটি ইটের ভাটায় একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপনের ছবিও তোলেন। এ সময় দারাদ জানান, আরও টাকা পেলে এই কেন্দ্র ভালো করে তৈরি করা যাবে। 
মোট কত টাকা দিয়েছেন জানতে চাইলে জাপানি এই দম্পতি জানান, সব মিলিয়ে জাপানের ৭৮ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তাঁরা ছয় কোটি ৮০ লাখ জাপানি ইয়েন (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা) সংগ্রহ করেন। এর বাইরে দারাদ ও তাঁর মা তাছলিমা খানমের লিখিত আবদারের ভিত্তিতে অতিরিক্ত আরও অর্থসহ মোট ছয় কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার ইয়েন (প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা) দেওয়া হয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরি করার জন্য। কিন্তু দারাদ এই টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
বারবার চিঠি, বারবার টাকা দাবি: তাছলিমা খানম একটি চিঠিতে বলেন, ‘২০০৭ সালের ১০ থেকে ২০ মে পর্যন্ত আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। কাজ খুব দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ২০০৭ সালের আগস্টে আমরা ভবন উদ্বোধন করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জাপানের সব সুযোগ-সুবিধা, লিফট, পার্কিং, বাগান, এয়ারকন্ডিশন, উন্নত বাথরুম থাকছে এখানে। আমরা প্রথম নকশা থেকে আরও বড় করেছি। আমি নিজে এই ভবন তৈরির জন্য তিন হাজার ৫০০ মান (এক মান মানে ১০ হাজার ইয়েন) খরচ করেছি। বর্তমানে আমার চাকরির বেতন দিয়ে চলতে পারছি না বিধায় আপনার সহায়তা কামনা করছি। আর দেড় হাজার ইয়েন হলে আগস্টে ভবনটি উদ্বোধন করা যাবে।’ চিঠিতে বলা হয়, এ বিষয়ে ১০ দিন ধরে বৈঠক হয়। এতে যোগ দেন তপন কুমার দেবনাথ, মুক্তাদির হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম, তপন চৌধুরী, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, কবির আনোয়ার প্রমুখ।
২০০৯ সালের ২০ আগস্ট আরেক চিঠিতে তাছলিমা লেখেন, ‘ভবনের চতুর্থ তলার কাজ শেষ হয়ে গেছে। বাকি রইল একতলা। খুব তাড়াতাড়ি কাজ করতে হচ্ছে। আমার চাকরির টাকায় কাজ করাচ্ছি। আপনাকে নিয়ে এই ভবন উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। ভবনে খুব দামি পাথর লাগানোর জন্য অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। আরও কিছু টাকা দরকার।’
২০০৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর তাছলিমা আরেকটি চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়, ‘আমি আবারও প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেছি। আগামী বছরের জানুয়ারিতে ভবন উদ্বোধন করতে চাই। আপনাদের সাহায্য ছাড়া কাজ শেষ করতে পারছি না। খুবই মূল্যবান গ্লাস ও পাথর লাগানোর জন্য খুব বেশি খরচ হচ্ছে। আর মাত্র ৬০০ মান দেবেন। এরপর আর টাকা চাইব না।’
২০১০ সালের ২৮ জুন এক চিঠিতে বলা হয়, ‘দুই দিন আগে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। আগামী মাসের ২৫ তারিখে ভবন উদ্বোধন করা হবে। এখন শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। টাকা লাগবে। আমি আমার গাড়ি বিক্রি করে দিয়ে ভবনের কাজ করছি। দয়া করে আর মাত্র ৩৬০ মান পাঠাবেন।’
২০১০ সালের ২ সেপ্টেম্বর আরেক চিঠিতে বলা হয়, ‘টাকার অভাবে এখনো ভবনে নিরাপত্তা ক্যামেরা ও এয়ারকন্ডিশন লাগাতে পারিনি। সুখবর হলো, ভবন উদ্বোধন করা হলে সরকার টাকা দেবে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে। তাই আপাতত ধার হিসেবে ২০০ মান চাইছি। আগামী মাসে ভবন উদ্বোধন করতে না পারলে প্রধানমন্ত্রী আর আসবেন না। আমিও সরকারি চাকরি থেকে অবসরে চলে যাব। আপনার টাকার দিকে তাকিয়ে থাকলাম।’
২০১০ সালের জানুয়ারিতে ভবন উদ্বোধনের একটি আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয় আজুমা দম্পতির কাছে। তাতে বলা হয়, ‘২৯ জানুয়ারি জাপান-বাংলাদেশ কালচারাল সেন্টারের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা অনুষ্ঠানে গান গাইবেন। নৃত্য পরিবেশন করবেন শামীম আরা নীপা ও শিবলী মহম্মদ। আমন্ত্রণে দারাদ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক, জাপান-বাংলাদেশ কালচারাল সেন্টার ও তাছলিমা খানম, পরিচালক, জাপান-বাংলাদেশ কালচারাল সেন্টার।’
যেভাবে প্রতারণা ধরা পড়ে: বারবার টাকা পাঠানোর অনুরোধ করায় টাকা দিয়েছেন এমন কয়েকজন জাপানির মনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। তাঁরা এ ব্যাপারে প্রশ্ন করেন। তবে আজুমা সন্দেহ করেননি। কিন্তু বারবারই উদ্বোধনের তারিখ পেছানো হয়। একপর্যায়ে দারাদ যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তখন আজুমা দম্পতি বুঝতে পারেন, তাঁরা প্রতারণার শিকার।
বর্তমান অবস্থা: অধ্যাপক কাযুও আজুমা বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে শয্যাশায়ী। বাংলা ভাষা ও বঙ্গভাষীদের কল্যাণে আজীবন নিজেকে নিবেদিত রেখে জীবনের এই শেষ প্রান্তে এসে তাঁকে এভাবে যে প্রতারণার শিকার হতে হবে, তা তিনি ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করেননি।
কেইকো আজুমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার স্বামী অধ্যাপক কাযুও আজুমা সারা জীবন উৎসর্গ করেছেন রবীন্দ্রচর্চায়। আমার স্বামী ও আমি বাঙালিদের ভীষণ ভালোবাসি। তাদের বিশ্বাস করি। দারাদ আহমেদকেও সেভাবে ভালোবেসেছি, বিশ্বাস করেছি। এর আগে বাঙালিদের নিয়ে কোনো খারাপ অভিজ্ঞতা হয়নি আমাদের। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে যে এভাবে ঠকে যেতে হবে, তা আমরা ভাবতেও পারিনি।’
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর জাপান সফরের সময় অধ্যাপক আজুমা তাঁর দোভাষী হিসেবে কাজ করেন এবং সেই সূত্রে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়। এ ছাড়া গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফরের সময় তাঁর খোঁজখবর নেন। পররাষ্ট্রসচিব মিজারুল কায়েস সে সময় আজুমার সঙ্গে দেখা করে তাঁকে ফুলের তোড়া উপহার দেন।
কেইকো এখনো চান, ‘জাপান-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ বাস্তবায়িত হোক। তিনি ঘটনার বিচার দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমার স্বামীকে ভালো করে চেনেন। গত বছর তাঁর জাপান সফরের সময় তিনি আমার স্বামীর খোঁজখবর নিয়েছিলেন এবং ওর জন্য ফুল পাঠিয়েছিলেন। আমি তাঁর কাছে ঘটনার বিচার দাবি করছি।’
প্রথম আলো

পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের পক্ষে ডিএসই ও সিএসই



পুঁজিবাজারের বর্তমান তারল্যসংকট দূর করতে বন্ডের পাশাপাশি অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের পক্ষে আবারও মত দিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সভাপতিরা। আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাঁরা এই মত দেন।
রিপোর্টার্স ইউনিটির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ডিএসইর সভাপতি শাকিল রিজভী, সিএসইর সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ, ডিআরইউর সভাপতি মোস্তাক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
পুঁজিবাজারের বর্তমান তারল্যসংকটের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ডিএসইর সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, ‘বাজারে বর্তমানে তারল্যসংকট রয়েছে। এ অবস্থা থেকে কাটিয়ে উঠতে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বন্ডের পাশাপাশি পুঁজিবাজারেও অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা শুনেছেন।’
শাকিল রিজভী বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ বন্ডে বিনিয়োগ করলে ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে এটা ঠিক। তবে প্রতিবছর বিনিয়োগকারীকে সরকারের পক্ষ থেকে ১০ শতাংশ মুনাফা ফেরত দিতে হবে। আর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করলে সরকারকে কোনো মুনাফা ফেরত দিতে হবে না।
সিএসইর সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদও অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের পক্ষে মত দেন। তবে বাজার যাতে আবার অতি মূল্যায়িত না হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ বাড়ানোর পক্ষে মত দেন তিনি।
২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার কী ভূমিকা রাখতে পারে? এ প্রশ্নের উত্তরে ডিএসইর সভাপতি বলেন, ‘আমরা যদি সবাই একসঙ্গে কাজ করি এবং সরকার যদি শেয়ারবাজারকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারে, তবে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।’
সিএসইর সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে প্রথমেই আমাদের একটি লক্ষ্য স্থির করতে হবে। সরকারের একটি নির্দিষ্ট পলিসি থাকতে হবে, যা কমপক্ষে পাঁচ মেয়াদি হতে হবে। এই সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন যাতে না হয়, সে বিষয়টি খেয়াল করতে হবে।’
আওয়ামী লীগের আমলে পুঁজিবাজারে ধস নামে কেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে শাকিল রিজভী বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পুঁজিবাজারেও এ ঘটনা ঘটে। সেখানে তো আওয়ামী লীগ বা বিএনপি নেই।’ তিনি বলেন, উত্থানপতন শেয়ারবাজারের ধর্ম। বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়তে বাড়তে বাজার অতি মূল্যায়িত হয় এবং একপর্যায়ে এ ধরনের ধসের সৃষ্টি হয়। এটা আওয়ামী লীগ বা বিএনপির দোষ নয়। এ ছাড়া দুই স্টক এক্সচেঞ্জই প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের চাপমুক্ত বলে জানান দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিএসই ও সিএসই সভাপতিরা বলেন, পুঁজিবাজারে কারসাজির অভিযোগ প্রমাণিত হলে জড়িতদের অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে দোষী বলা ঠিক হবে না। এ ব্যাপারে বাজারে ভীতি ছড়ানো ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন তাঁরা। একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের আস্থা যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন তাঁরা।

Friday, June 24, 2011

গ্রামীণফোন ২০০ কোটি টাকা অগ্রিম আয়কর দিয়েছে


গ্রামীণফোনের উপপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান শামসী গত বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদের কাছে কোম্পানির অগ্রিম আয়করের মাসিক কিস্তির ২০০ কোটি টাকার চেক তুলে দেন
গ্রামীণফোন লিমিটেড চলতি ২০১০-১১ অর্থবছরের অগ্রিম আয়করের মাসিক কিস্তি হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) ২০০ কোটি টাকা জমা দিয়েছে।
গ্রামীণফোনের উপপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা রায়হান শামসী গত বুধবার এনবিআরের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদের কাছে অগ্রিম আয়কর হিসেবে উল্লিখিত টাকার একটি চেক হস্তান্তর করেন। এ সময় এনবিআর ও গ্রামীণফোনের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
গ্রামীণফোন ২০১০-১১ অর্থবছরে শুধু আয়কর হিসেবেই এক হাজার আট কোটি টাকা জাতীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে।
আয়কর, ভ্যাট, শুল্ক ও বিভিন্ন প্রদেয় মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের মার্চ মাস পর্যন্ত গ্রামীণফোন সরকারকে মোট দুই হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা দিয়েছে। গ্রামীণফোন তার প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত মার্চ পর্যন্ত জাতীয় কোষাগারে মোট ১৯ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা দিয়েছে। গ্রামীণফোন এ পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট ১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করেছে। বিজ্ঞপ্তি।

অবৈধ অর্থ লেনদেন মামলা কোকোর ৬ বছরের জেল



আরাফাত রহমান কোকো
বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে ছয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া কোকোকে জরিমানা দিতে হবে প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা। 
সিঙ্গাপুরে ২০ কোটি টাকার বেশি অর্থের অবৈধ লেনদেনের দায়ে গতকাল বৃহস্পতিবার আদালত এ রায় দিয়েছেন। সিঙ্গাপুর থেকে এই টাকার সমপরিমাণ অর্থ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নিতেও আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, টেলিযোগাযোগ খাতে সিমেন্সকে কাজ পাইয়ে দিতে এই অর্থ ঘুষ নিয়েছিলেন আরাফাত রহমান কোকো।
মামলার অপর আসামি সাবেক মন্ত্রী মরহুম লে. কর্নেল আকবর হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মনকে একই দণ্ড দিয়েছেন আদালত। আদালত মোট জরিমানা করেছেন ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, যা কোকো ও সায়মনকে অর্ধেক অর্ধেক করে দিতে হবে। 
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক মোজাম্মেল হোসেন আসামি কোকো ও সায়মনকে পলাতক দেখিয়ে গতকাল এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, আসামিদের আদালতে হাজির হয়ে মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেওয়া সত্ত্বেও তাঁরা হাজির হননি। আসামিরা গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণ করার তারিখ থেকে এ রায় কার্যকর হবে। 
জিয়া পরিবারের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে অর্থের অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে এই প্রথম কোনো মামলার রায় দেওয়া হলো।
গতকাল দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে রায় ঘোষণা করা হয়। বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের হট্টগোলের মধ্যেই বিচারক রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পড়ে শোনান। রায়ে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে ২০০২ সালের মানি লন্ডারিং আইনের ২(ক) আ, ই ১৩ ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় দুজনকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলো। এ সময় বিএনপিপন্থী আইনজীবী ‘প্রহসনের রায় মানি না’ বলে আদালতকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। 
মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল গত বছর ৩০ নভেম্বর। চলতি বছর ৪ জানুয়ারি কোকো পলাতক থাকায় তাঁর অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ শুরু হয়। ১৯ জুন যুক্তিতর্ক শেষে আদালত রায়ের তারিখ ধার্য করেন। 
এর আগে ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় দুদক এ মামলা করে। সিঙ্গাপুরে ২৮ লাখ ৮৪ হাজার সিঙ্গাপুরি ডলার এবং নয় লাখ ৩২ হাজার ৬৭২ মার্কিন ডলার (সে সময়ের বাজারদর অনুযায়ী ২০ কোটি ৮৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫১৮ টাকা) অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে ২০০৯ সালের ১২ নভেম্বর অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর কোকোকে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ২০০৮ সালের মে মাসে তাঁকে সাময়িক মুক্তি (প্যারোল) দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফা এর মেয়াদ বাড়ানোর পর গত ১৪ আগস্ট প্যারোলের মেয়াদ শেষ হয়। ১৯ আগস্ট প্যারোল বাতিল করে ৩১ আগস্টের মধ্যে দেশে ফিরতে চিঠি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কোকোর পক্ষে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ আগস্ট হাইকোর্ট ৪০ দিনের জন্য প্যারোলের মেয়াদ বাড়ালেও এর শর্ত ভঙ্গ করায় আপিল বিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। এরপর বিচারিক আদালত কোকোর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আদালত পরিস্থিতি: গতকাল বেলা ১১টার আগেই আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালতকক্ষে জড়ো হন। ১১টা ২০ মিনিটে বিচারক এজলাসে ওঠেন। প্রথমেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার শুনানি হয়। এ মামলায় আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। এরপর আদালত থেকে জানানো হয়, দুপুর ১২টার পর রায় ঘোষণা করা হবে। এ সময় থেকেই বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালতকক্ষের বাইরে ও আদালত চত্বরে মিছিল এবং ‘কোকোর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় প্রহসনের বিচার মানি না’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে আদালত ভবনে আইনজীবীরা দলবদ্ধ হয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। 
গতকাল আদালত এলাকায় নেওয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা। সকাল থেকেই পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন ছিল। 
কোকোর সাজার রায়ের খবর ছড়িয়ে পড়লে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ব্যানারে আইনজীবীরা জড়ো হতে থাকেন। পরে তাঁরা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। সমাবেশ থেকে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ সাজা দেওয়া হয়েছে। বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট ও আইনজীবী সমিতি ভবনের সংযোগ পথে রাখা ফুলের টব ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া দ্বিতীয় তলা থেকে ফুলের টব ছুড়ে ফেলে দিলে নিচে থাকা দুটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 
অন্যদিকে রায় ঘোষণার পর আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা রায়কে স্বাগত জানিয়ে মিছিল করেন।
আইনজীবীদের প্রতিক্রিয়া: রায়ের পর দুদকের প্রধান কৌঁসুলি আনিসুল হক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) সিমেন্সের একটা ঘুষ কেলেঙ্কারি তদন্ত করতে গিয়ে কোকোকে ঘুষ দেওয়ার বিষয়ে তথ্য পায়। সেই কাগজপত্র থেকে শুরু হয় অনুসন্ধান, পরে এজাহার করা হয়। তথ্যটা যেহেতু এফবিআই থেকে প্রাপ্ত, এখানে সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বেলা দুইটার দিকে আইনজীবী সমিতি ভবনে নিজ কক্ষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। 
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘সিমেন্স এফবিআইয়ের কাছে দোষ স্বীকার করেছে। আমরা সিঙ্গাপুরে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করেছি। সিঙ্গাপুরের সেই ব্যাংকে কোকোর পাসপোর্টের একটা ফটোকপি দেওয়া হয়েছিল।’ কোকোর সাজা কার্যকর করতে হলে কী করতে হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘কোকো বর্তমানে যে দেশে রয়েছেন, সেই দেশের সঙ্গে প্রত্যাবর্তন চুক্তি থাকলে তা কার্যকর করতে পারে। এটা সরকারের ব্যাপার। আমি মন্তব্য করতে চাই না।’ 
দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন রায়ের পর আদালত প্রাঙ্গণে বলেন, দুদকের ২১ সাক্ষীর জবানবন্দি পর্যালোচনা করে আদালত রায় দিয়েছেন। 
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন নিজ কার্যালয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন কোকোর মামলার ত্বরিত নিষ্পত্তির কথা বলেছিলেন, তখনই আশঙ্কা হয়েছিল, ত্বরিত নিষ্পত্তি মানে ত্বরিত শাস্তি। আমাদের সেই আশঙ্কা সত্যি হয়েছে।’ 
মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘নিম্ন আদালত যখন একটা রায় দিয়েছেন, তখন উচ্চ আদালতেই এর ফয়সালা হবে। এ মামলায় ত্রুটি আছে। তাই আশা করি, উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার পাবেন কোকো।’ তিনি বলেন, ‘যখন এই মামলা উচ্চ আদালতে আসবে, তখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকবে না। তখন দলীয়করণমুক্ত অবস্থায় উচ্চ আদালত ন্যায়বিচার করতে পারবেন বলে আমরা আশা করি।’ 
কোকোর আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া, গোলাম মোস্তফা খান ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার একে প্রহসনের রায় উল্লেখ করে রায়ের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। 
মামলার বিবরণ: মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, কোকোর দেওয়া আয়কর বিবরণী ও দুদকে দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে সিঙ্গাপুরে তাঁর হিসাবে অর্থ জমা বা উত্তোলনের কোনো উল্লেখ নেই। সিঙ্গাপুরে জ্যাজ ট্রেডিং অ্যান্ড কনসালটিং প্রাইভেট লিমিটেড এবং ফারহিল কনসালটিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে কোকোর দুটি কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে অর্থ জমা হওয়ার সময় তাঁর মা বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। যেসব সূত্র থেকে অর্থ জমা হয়েছে তাদের সঙ্গে কোকোর কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্কও ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হিসেবে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তিনি অবৈধ উপায়ে এ অর্থ আয় করেন। 
এজাহারে বলা হয়েছে, ইউওবি ব্যাংকের জ্যাজের হিসাবে ২০০৫ সালের ৬ মে এবং ৩১ মে নয় লাখ ২০ হাজার ৯৮৬ দশমিক ৫৭ এবং আট লাখ ৩০ হাজার ৬৫৬ দশমিক ৭৭ সিঙ্গাপুর ডলার জমা হয়। চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি থেকে এই অর্থ পাঠানো হয়। একই বছরের ১ আগস্ট নিউইয়র্ক থেকে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে পাঠানো হয় আরও আট লাখ ২৯ হাজার ৭০৫ দশমিক ৮১ সিঙ্গাপুর ডলার। এর বাইরে জ্যাজের হিসাবে ২০০৫ সালের ৬ অক্টোবর আবারও এক লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার (তিন লাখ তিন হাজার ২৫৪ সিঙ্গাপুর ডলার) জমা হয়। ওই অর্থ জুলফিকার আলী নামের এক ব্যক্তি সিঙ্গাপুরের আরেকটি ব্যাংকের হিসাব থেকে হস্তান্তর করেন। জুলফিকার আলী টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিমেন্সের পরামর্শক। 
সিমেন্স বাংলাদেশকে তিনি রাষ্ট্রীয় মোবাইল ফোন প্রতিষ্ঠান টেলিটকের কাজ পাইয়ে দিতে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছিলেন। টেলিটকের কাজ পেতে সিমেন্স কোকোসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্তরের সরকারি কর্মকর্তাদের যে ঘুষ দিয়েছিল, তা প্রমাণিত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের আদালত কোম্পানিটির বিরুদ্ধে জরিমানার রায় দেন। জরিমানার অর্থ পরিশোধও করেছে সিমেন্স। 
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, জ্যাজের হিসাব থেকে বিভিন্ন দফায় কোকোর সইয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। হিসাবে ২৮ লাখ ৮৫ হাজার ৭৫৪ দশমিক ১৫ সিঙ্গাপুর ডলার জমার বিপরীতে বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে আট লাখ ৭২ হাজার ৮৬ দশমিক ৭৭ সিঙ্গাপুর ডলার উত্তোলন করেন কোকো। ২০০৫ সালের ২৯ জুলাই আট লাখ ৩০ হাজার ৬৫৬ দশমিক ৭৭ সিঙ্গাপুর ডলার ইসমাইল হোসেনকে দেওয়া হয়। 
জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও আয়কর ফাঁকির অভিযোগে ২২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো, নাইকো, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাৎ-সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলা রয়েছে। এ ছাড়া তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১২টি মামলা রয়েছে। তারেকের বিরুদ্ধে করা অর্থ পাচারের মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ৭ জুলাই দিন ধার্য রয়েছে। বাকি মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।
প্রথম আলো

Monday, June 20, 2011

পুঁজিবাজার শুরুতেই ঊর্ধ্বমুখী


দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে চলছে। আজ মঙ্গলবার প্রথম আধঘণ্টা শেষে ডিএসইতে সূচক বেড়েছে ১১৪ পয়েন্ট। সঙ্গে লেনদেন হওয়া প্রায় সবগুলো প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডিএসইতে সাধারণ মূল্যসূচক ১১৪.৯১ পয়েন্ট বেড়ে ৫,৮১০.৬৯ পয়েন্টে দাঁড়ায়। এ সময়ে লেনদেন হওয়া ২০৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ২০৪টির, কমেছে দুটির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠানের দাম এবং মোট ৯০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।
লেনদেনের ১০ মিনিটের দিকে সূচক ১২১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর সূচক বাড়ার হার কিছুটা কমে। ১৮ মিনিটের দিকে সূচক বাড়ে ১০১ পয়েন্ট। ২০ মিনিটের পর সূচক আবার বাড়তে থাকে। লেনদেনের প্রথম আধঘণ্টা শেষে এ ধারা অব্যাহত রয়েছে।
এ সময়ে লেনদেন হওয়া শীর্ষ ১০টি প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে—ইউসিবিএল, বেক্সিমকো, লঙ্কা বাংলা ফাইন্যান্স, আফতাব অটো, পূবালী ব্যাংক, এম আই সিমেন্ট, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, ইবিএল, এবি ব্যাংক ও পিএলএফএসএল।

আপনি কি সফল হতে চান?


আপনি কি ছাপোষা জীবন যাপন করছেন? জীবনটা হোস্টেলের ডালের মতো পানসে লাগছে? কোনো চার্ম নেই। আজ সিঙ্গাপুর তো কাল কুয়ালালামপুর করতে পারছেন না। আজিমপুর টু মিরপুর করেই দিন কাটছে। দুপুরবেলা রুটি-ভাজি গিলতে কষ্ট হচ্ছে! বিকেলের বিলাসিতা মোড়ের দোকানের ডালপুরি? ওয়েস্টিনে ব্রেকফাস্ট তো সোনারগাঁওয়ে ডিনার হচ্ছে না? লাস ভেগাসে গিয়ে হাজার হাজার ডলার ওড়ানোর মুরোদ নেই? কিন্তু স্বপ্ন আছে? হাজার কোটি টাকার মালিক হতে চান? কিন্তু ব্যাংকে কোনো অ্যাকাউন্টই নেই?
আপনাকেই আমরা খুঁজছি। বছর ঘোরার আগেই এক শ কোটি টাকা। দুই বছরের মাথায় হাজার কোটি টাকার মালিক হতে পারবেন আপনি। বউয়ের গয়না বিক্রি করুন। কিছু টাকা নিয়ে আসুন। ঢাকায় একটা বাড়ি ভাড়া করতে হবে। লাখ দুয়েক টাকা তো বিনিয়োগ করতেই হবে। একেবারে কিছুই খাটাবেন না, তা কী করে হয়। মাথাটা তো খাটাতেই হবে, কিছু টাকাও। লাখ কয়েক টাকা বন্ধুর কাছ থেকে ধার নিন, এক মাসের মাথায় শোধ করে দিতে পারবেন। একটা অফিস নিয়েছেন? এবার একটা কাগজ নিন। এটাতে মানচিত্র আঁকুন। ইচ্ছেমতো আঁকুন। নাম দিন ‘পূর্বাচল চাঁদের দেশ প্রকল্প’। মানচিত্রটা কিসের? চারকোনা করে কতগুলো ঘর আঁকুন। সেক্টর এক। রাস্তা এক। তার দুধারে প্লট। তারপর রাস্তা দুই। তার দুধারে প্লট। তিন কাঠা। পাঁচ কাঠা। ইচ্ছেমতো আঁকুন। লেক আঁকুন। লেকভিউ প্লট। ১০ কাঠা। এক হাজারটা প্লট আঁকুন। দুই হাজার প্লট আঁকুন। এবার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন। বর্ষা উপলক্ষে কদমবাহার ছাড়। কাঠাপ্রতি তিন লাখ টাকা ছাড়। বুকিং দিলেই রঙিন টেলিভিশন। এক লাখ টাকা বুকিং। তারপর মাসে মাসে কাঠাপ্রতি কুড়ি হাজার টাকা কিস্তি। পাঁচ বছর ধরে দেওয়া যাবে। হইহই কাণ্ড রইরই ব্যাপার।
এরপর ঢাকার বাইরে কোনো একটা ধানখেতের চাষির কাছ থেকে ধানখেতে সাইনবোর্ড লাগানোর অনুমতিটা কিনে নিন। চাষি মাসে মাসে এক হাজার টাকা করে পাবেন। এই হলো আপনার সাইট। তাতে সাইনবোর্ড লাগান ‘পূর্বাচল চাঁদের দেশ প্রকল্প’। বাইশ শতকের আবাসভূমি। জমি বিক্রি শুরু হয়ে গেল। টাকা আসতে শুরু করেছে? ১০০ জন বুকিং দিয়েছেন? ব্যস, পকেটে এক কোটি টাকা এসেছে। সামনের মাসে আবার এক কোটি টাকা আসবে। এবার বিজ্ঞাপনের মহড়া বাড়িয়ে দিন। প্রকল্প এলাকায় পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে এক বিঘা জমি কিনেও ফেলুন। ব্যস, আর কিছু না। দাগ দেওয়া প্লট বিক্রি করতে থাকুন। টাকা আর টাকা। টাকা মানে সম্মান। টাকা মানে নিরাপত্তা। এক হাজার প্লট বিক্রি হয়েছে? ৫০০ কোটি টাকা আপনার পকেটে। এবার আপনি কিছু প্লট ক্রেতাকে বুঝিয়ে দিন। হ্যাঁ, বিভিন্ন ঘাটে কিছু টাকাপয়সা তো আপনাকে খরচ করতেই হবে। ক্রেতারা যদি দল বেঁধে ঘেরাও করতে আসে? আসবে না। কত প্লটই তো বিক্রি হয়েছে। কত ক্রেতা বুঝে পেয়েছে। কিন্তু তার চেয়েও কত বেশিসংখ্যক ক্রেতা বুঝে পায়নি। তাই বলে কি প্লটের ব্যবসা থেমে আছে? সব কোম্পানি মিলে যত প্লট বিক্রি করেছে, তার মোট জমির পরিমাণ ৫৫ হাজার ১২৬ বর্গমাইলের বেশি না কম, এটা একটা প্রশ্ন বটে। তবে আমাদের প্রকল্পের নাম যেহেতু ‘পূর্বাচল চাঁদের দেশ প্রকল্প’, সেহেতু আমাদের সেই দুর্ভাবনা না করলেও চলবে। দেশে জমি না পেলে আমরা চাঁদের জমি বিক্রি করব।
এ ব্যবসায় কোনো লস নেই। আপনার হাতে যখন টাকা আসবে, তখন আইনের হাত আপনার কাছে লম্বা মনে হবে না। টাকা আপনাকে সব দেবে। দেবে মান-সম্মান-নিরাপত্তা। দেবে প্রভাব-প্রতিপত্তি। আপনি তখন ধরাকে সরা জ্ঞান করে সরার দই খাবেন। পৃথিবীটা কার বশ? অবশ্যই টাকার। পত্রিকা-টেলিভিশনে আপনার বিজ্ঞাপন বেরুচ্ছে, কেউ আপনার বিরুদ্ধে টুঁ-শব্দ করবে না। নেতাদের আপনি চাঁদা দেবেন। তাঁরা আপনার প্রকল্পের নকশার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে ফিতা কাটবেন। আমার মতো কবি-সাহিত্যিকেরা আপনার মতো দেশসেবক-জনসেবক উদ্যোক্তাদের কীর্তি বন্দনা করে কবিতা লিখবে। কলাম লিখবে। আমরা বলব, আপনি কর্মসংস্থান করেছেন। আপনি এ দেশের বাসস্থান সমস্যার সমাধানে যে অবদান রাখছেন, তার কোনো তুলনা নেই। আপনি চাইলে আপনার নামে পদক প্রবর্তন করতে পারেন—‘আক্কেল আলী অনন্য বুদ্ধিজীবী পদক’। বছরে একবার বড় অনুষ্ঠান করে সেই পদক তুলে দিতে পারেন দেশের সবচেয়ে অগ্রগণ্য কোনো বুদ্ধিজীবীর হাতে। সবাই ধন্য ধন্য করবে।
আপনি এখন অনেক বড়লোক। আমার ধরাছোঁয়ার বাইরে। আমি আপনাকে পরামর্শ দিতেও এখন ভয় পাচ্ছি। আমার এই লেখার মাধ্যমে আমি যে বেয়াদবি করেছি, আপনি আশা করি তা নিজ গুণে ক্ষমা করে দেবেন। সাফল্য এখন আপনার করতলে। আপনি সুখী হোন।
আনিসুল হক: সাহিত্যিক ও সাংবাদিক।

৩৪ কোটি টাকায় বিক্রি মনরোর পোশাক



undefined
মেরিলিন মনরো
‘দ্য সেভেন ইয়ার ইচ’ ছবিতে ব্যবহূত মেরিলিন মনরোর আলোচিত সেই পোশাক বিক্রি হয়ে গেছে। তবে যেনতেন মূল্যে নয়। মেরিলিন মনরোর আলোচিত সেই পোশাক বিক্রি হয়েছে প্রায় ৩৪ কোটি টাকায়। সম্প্রতি হলিউডের পোশাক বিক্রির এক নিলামে চলচ্চিত্র ইতিহাসের সুপরিচিত এই পোশাকটি বিক্রি হয়।
১৯৫৫ সালের ৩ জুন মুক্তি পাওয়া ‘দ্য সেভেন ইয়ার ইচ’ ছবিটি পরিচালনা করেন বিলি ওয়াইল্ডার। হলিউডের ইতিহাসে অন্যতম ব্যবসাসফল ছবিগুলোর একটি ‘দ্য সেভেন ইয়ার ইচ’। প্রায় ২৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ ছবিটি সে সময়ই প্রায় ৮৮ কোটি টাকা আয় করে নেয়।
এর আগে ‘জেন্টেলম্যান প্রেপার ব্লন্ডি’ ছবিতে ব্যবহূত মেরিলিন মনরোর লাল রঙের একটি পোশাক বিক্রি হয়েছিল প্রায় আট কোটি টাকায়। ওয়েবসাইট।

আল-কায়েদার অর্থ সংগ্রহের জন্য অপহরণ!

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদার জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে পাকিস্তানে এর সহযোগী সংগঠনগুলো অপহরণের দিকে ঝুঁকছে। আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে হত্যা করার সময় সেখান থেকে উদ্ধার করা নথি থেকে মার্কিন কর্মকর্তারা এ তথ্য পেয়েছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, সংগঠনের অর্থের প্রয়োজনে বিকল্প উৎস খুঁজতে অপহরণের দিকে ঝুঁকে পড়ে আল-কায়েদার সহযোগী কয়েকটি গোষ্ঠী। আর কোন কোন অপরাধে এ গোষ্ঠী বা সংগঠনগুলো জড়িয়েছে, তাঁরা তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেননি। তবে জানান, অপহরণের লক্ষ্য ছিল কূটনীতিক, পর্যটক ও বড় ব্যবসায়ীরা।
কর্মকর্তারা জানান, অর্থ সংগ্রহের জন্য অপহরণের বিষয়ে জানতেন ওসামা বিন লাদেন। এতে তাঁর আগ্রহও ছিল। এমন তথ্য-প্রমাণও রয়েছে, অ্যাবোটাবাদে উঁচু দেয়াল ঘেরা ওই বাড়িতে থাকলেও অর্থ সংগ্রহের বিষয় তাঁর নজরদারিতে ছিল।
মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) জাতীয় সন্ত্রাসবাদবিরোধী কেন্দ্র, রাজস্ব বিভাগ, কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই) ও সেনা বিশেষজ্ঞরা অ্যাবোটাবাদে উদ্ধার করা নথি থেকে আরও বেশি জানার চেষ্টা করছেন। আল-কায়েদার অর্থের উৎস ও সহযোগী সংগঠনগুলোর অর্থ সংগ্রহের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা-ও খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, নথি থেকে আল-কায়েদার বড় বড় দাতা, বিশেষ করে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের সম্পদশালী ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে সক্ষম হবেন।
রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা ডেভিড কোহেন বলেন, আল-কায়েদার অর্থ সরবরাহ বন্ধে সংগঠনটির দাতা, অর্থ সংগ্রহকারী ও এর সঙ্গে জড়িতদের গুরুত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আল-কায়েদার সমর্থকেরা অবাক হবেন, যদি তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়।
ওসামার নথি থেকে পাওয়া নামের তালিকা খতিয়ে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, ওই তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব, ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। জিনিউজ।

দরপতনে ডিএসইর সামনে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ


undefined
পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনের প্রতিবাদে আজ সোমবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা অর্থমন্ত্রী, ডিএসই সভাপতি ও এসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করে তাঁদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
ক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে দরপতনের প্রতিবাদ জানান ও এতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসার দাবি জানান।
বেলা আড়াইটার দিকে এসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেন ডিএসই পরিদর্শনে আসেন।
আজ ডিএসইতে দিনের লেনদেন শেষে সাধারণ মূল্যসূচক ৯.০৫ পয়েন্ট বেড়ে ৫,৬৯৫.৭৭ পয়েন্টে দাঁড়ায়। আজ লেনদেন হওয়া ২৫৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ১৪৫টির, কমেছে ৯৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টি প্রতিষ্ঠানের দাম। স্টক এক্সচেঞ্জে মোট ৩৪১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা গত দিনের চেয়ে ১৩ কোটি টাকা কম।
আজ ডিএসইতে লেনদেনের প্রথম ঘণ্টা শেষে দরপতন শুরু হয়। দরপতনের এ ধারা চলে বেলা আড়াইটার পর্যন্ত। তবে লেনদেনের শেষ দিকে সূচক গত দিনের চেয়ে কিছুটা বেড়ে যায়।
আজ ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষে থাকা ১০টি প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে—লঙ্কা বাংলা ফাইন্যান্স, ইউসিবিএল, এনবিএল, বেক্সিমকো, এম আই সিমেন্ট, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, পিএলএফএসএল, সিটি ব্যাংক, বিএসআরএম স্টিল ও পূবালী ব্যাংক।

কর্তা যখন অযোগ্য


যুক্তরাজ্যে কর্মরত অর্ধেকেরও বেশি কর্মীরা মনে করে, তারা যাদের বা যার অধীনে কাজ করেন, তারা সেই পদের জন্য মোটেই উপযুক্ত না। একটি নতুন গবেষণায় সম্প্রতি উঠে এসেছে এমনই একটি মজার তথ্য। যুক্তরাজ্যের দুই হাজার কর্মীর ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা যায়, ৫৫ শতাংশ কর্মী মনে করে, তাদের ম্যানেজার যে কাজটি করছে, সেটি ঠিকমত কিংবা সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে করছে না। চার্টার্ড ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট (সিএমআই)-এর রিপোর্টে আরও বলা হয়, নিয়ন্ত্রণ আর নেতৃত্বে উপযুক্ত ব্যক্তির অভাবের কারণে কর্মস্থলে কাজের সুন্দর পরিবেশ থাকতে পারছে না।
জরিপে অংশ নেওয়া প্রতি পাঁচজনের মাঝে দুজনের মতে, তাদের বসের কাজ এবং আচরণে হতাশার চিহ্ন দিনদিন বেড়েই চলেছে। তৃতীয়জনের মতে, তাদের বস কাজের জায়গার আনন্দটুকু নষ্ট করে দিয়েছে। প্রতি দশজনের একজন আবার স্বাস্থ্য খারাপ হবার জন্যও ম্যানেজারকেই দায়ী করেন! সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হল, অধিকাংশ কর্মীই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে থেকে প্রয়োজনীয় সাহায্য পায় না। দুই-তৃতীয়াংশ কর্মী জানান, তারা কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে বসের মতামত চেয়েও পান নাই কোন জবাব। এ প্রসঙ্গে সিএমআই-এর প্রধান নির্বাহী রুথ স্পেলম্যান বলেন, ‘এসব ফলাফল এটাই প্রকাশ করে যে, যুক্তরাজ্যের কর্মক্ষেত্রগুলোকে আরও গতিশীল করার জন্য সেখানকার ম্যানেজারদের উচিত নিজের দলের প্রয়োজন মেটানোর জন্য আরও বেশি চেষ্টা করা। যদি ম্যানেজার চান তার দল নিজের পুরো সামর্থ্য ঢেলে কাজ করবে, তাহলে তাকেও নিজের যোগ্যতা এবং আত্মবিশ্বাসের পরিচয় দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘একটি গতিশীল কাজের ক্ষেত্র মানেই উৎপাদন বৃদ্ধি, সেই সঙ্গে অনুপস্থিতি এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রবণতা কমে যাওয়া।’
ফাহমিদা হক, প্রথম আলো

Sunday, June 19, 2011

সপ্তাহের শুরুতে পুঁজিবাজারে দরপতন


undefined
গত সপ্তাহের শেষ তিন দিনের ন্যায় আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম দিন পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। আজ দুই স্টক এক্সচেঞ্জে বেশির ভাগ শেয়ারের দাম কমায় কমেছে সাধারণ সূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনও। এ নিয়ে টানা চার দিন দরপতন অব্যাহত রয়েছে পুঁজিবাজারে।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, আজ দিনের শুরুতে সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে লেনদেন শুরু হয়। লেনদেনের প্রথম ১০ মিনিটে ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক ২০ পয়েন্ট কমে যায়। ২০ মিনিটের মাথায় সূচক কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে আগের দিনের চেয়ে ৬ পয়েন্ট বাড়ে। এর পর থেকে সূচক নিম্নমুখী হতে শুরু করে, যা সারা দিনই অব্যাহত থাকে। দিন শেষে ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক ৮৯.৪৫ পয়েন্ট কমে ৫৬৮৬.৭২ পয়েন্টে দাঁড়ায়।
ডিএসইতে হাতবদল হওয়া ২৫৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে মাত্র ২৫টির, কমেছে ২২০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে আটটি প্রতিষ্ঠানের দাম। স্টক এক্সচেঞ্জটিতে আজ ৩৫৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা গত বৃহস্পতিবারের চেয়ে ১৩১ কোটি টাকা কম।
ডিএসইতে আজ লেনদেনে শীর্ষে থাকা ১০টি প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে এনবিএল, ইউসিবিএল, লঙ্কা-বাংলা ফাইন্যান্স, বেক্সিমকো, এমআই সিমেন্ট, সিটি ব্যাংক, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, ওয়ান ব্যাংক, বিএসআরএম স্টিল ও আফতাব অটো।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক আজ ২১০ পয়েন্ট কমে ১৫৮২৩.৩৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে হাতবদল হওয়া ১৮৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ১৫টির, কমেছে ১৬৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে সাতটি প্রতিষ্ঠানের দাম। স্টক এক্সচেঞ্জটিতে আজ ৫৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে তিন কোটি টাকা কম।
প্রথম আলো..

তিন টাকার শেয়ার তিন বছরে ১১৯ টাকা!

২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের সর্বনিম্ন দর ছিল তিন টাকা ৭০ পয়সা। ২০১০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই দাম বাড়তে বাড়তে পৌঁছায় সর্বোচ্চ ১১৯ টাকা ১০ পয়সায়।
অর্থাৎ তিন বছরে প্রতিটি শেয়ারের দাম বাড়ে প্রায় ৩২ গুণ। এ সময়ে কোম্পানিটির বাজার মূলধন মাত্র সাত কোটি পাঁচ লাখ ৮০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ২৮৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
নানা কারসাজির মাধ্যমে দাম বাড়ার এ চমক দেখায় ২০০২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মৎস্য খাতের কোম্পানি বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
কখনো কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণের মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে উদ্যোক্তারা নিজেই, কখনো ঋণসুবিধা-বহির্ভূত এ কোম্পানির শেয়ার কিনতে গ্রাহকদের মোটা অঙ্কের ঋণসুবিধা দিয়ে ঋণদাতা কিছু প্রতিষ্ঠান, আবার কখনো একদল বিনিয়োগকারী সংঘবদ্ধ হয়ে কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারের দাম বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। আর এ সুযোগে কোম্পানির সংরক্ষিত (সাসপেন্স) হিসাব থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ২১ হাজার শেয়ার গোপনে বিক্রি করে প্রায় ১৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন কোম্পানির দুই কর্মকর্তা।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নির্দেশে কোম্পানির লেনদেনের তথ্যানুসন্ধান করে কারসাজির এসব ঘটনা উদ্ঘাটন করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। কিন্তু এসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন সদস্যের কারণে সে সময় এ ব্যাপারে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরে শেয়ারবাজার ধসের কারণ অনুসন্ধানে সরকারের উদ্যোগে কমিটি গঠনের পর নড়েচড়ে বসে এসইসি। এ সময় অভিযুক্ত কয়েকটি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীকে শুনানিতে ডাকা হয়। তবে এসইসির পরিবর্তন ও পুনর্গঠন-জটিলতায় বিষয়টির তেমন অগ্রগতি দেখা যায়নি। পুঁজিবাজার তদন্ত কমিটিও কোম্পানিটির শেয়ারের দর বাড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে এসইসির চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনটি আমার কাছে এসেছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি এটি সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠিয়েছি।’
২০১১ সালের ৩ জানুয়ারি কোম্পানি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানায়, তারা এক কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার পৌর এলাকায় এক দশমিক ২৭ একর জমি কিনেছে। নিবন্ধনসহ যার ব্যয় দেখানো হয় এক কোটি ১৬ লাখ টাকা। এর কিছু দিন আগে কোম্পানির একাধিক উদ্যোক্তা বিপুল পরিমাণ শেয়ার লেনদেন করেন। এ তথ্য উল্লেখ করে পুঁজিবাজার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে সুবিধাভোগী বা ইনসাইডার লেনদেনের সন্দেহ করা হয়েছে। এ ছাড়া কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।
ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদন: ডিএসইর প্রতিবেদনে ঋণসুবিধাবহির্ভূত থাকা সত্ত্বেও বিচ হ্যাচারির শেয়ার কিনতে গ্রাহকদের ঋণ ও আর্থিক সমন্বয় (নেটিং) সুবিধা দিয়েছে এমন পাঁচটি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: ইন্টারন্যাশনাল লিজিং সিকিউরিটিজ, পিএফআই সিকিউরিটিজ, ব্যাংক এশিয়া, ন্যাশনাল ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংক। সব প্রতিষ্ঠানই পরে ডিএসইর কাছে লিখিতভাবে দুঃখ প্রকাশ ও এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে আর ঘটবে না বলে অঙ্গীকার করেছে। এসইসির শুনানিতেও তারা একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বিচ হ্যাচারির শেয়ারের অস্বাভাবিক লেনদেনের সঙ্গে ১৯ জন বিনিয়োগকারীর জড়িত থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে কখনো এককভাবে, আবার কখনো সংঘবদ্ধভাবে এসব বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনা ঘটান। এর বাইরে আরও আটজন বিনিয়োগকারীর নিয়ম ভেঙে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনে নেটিং ও ঋণসুবিধা নেওয়ার তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে। এ তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে তাঁরা হলেন: শহীদুল ইসলাম, মোহাম্মদ ইমরান, এস কে মনসুর আলী, হালিমা খাতুন, নোমান ইসলাম, আবু আহমেদ, এস এম জিল্লুর রহমান ও জিয়াউদ্দিন আদিল।
সংরক্ষিত হিসাবের শেয়ার আত্মসাৎ: ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানির সংরক্ষিত হিসাবে থাকা শেয়ারধারীদের প্রাপ্য ২১ হাজার বোনাস শেয়ার আত্মসাৎ করেছেন কোম্পানি সচিব (তৎকালীন) নূর ইসলাম ও শেয়ার বিভাগের কর্মকর্তা আবদুল আলীম। এর মধ্যে সাড়ে আট লাখ টাকা হাতিয়ে নেন কোম্পানি সচিব আর চার লাখ টাকা নেন শেয়ার বিভাগের কর্মকর্তা। দুজনই বিষয়টি লিখিতভাবে ডিএসইর তদন্ত দলের কাছে স্বীকার করেছেন।
তালিকাভুক্ত কোম্পানির সাসপেন্স হিসেবে সাধারণত বিভিন্ন কারণে অবণ্টিত শেয়ার জমা থাকে। পরে দাবিদার খুঁজে পাওয়া গেলে ওই সব শেয়ার বণ্টন করা হয়। প্রকৃত মালিককে না জানিয়ে কোম্পানির হিসাবে সংরক্ষিত থাকা এসব শেয়ার বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।
যোগাযোগ করা হলে নূর ইসলাম বলেন, ‘কোম্পানির সাসপেন্স হিসাব থেকে ২১ হাজার শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। কোম্পানির শেয়ার বিভাগের কর্মকর্তা আবদুল আলীমই এসব শেয়ার বিক্রি করেছেন।’
ডিএসইর তদন্ত দলের কাছে কেন লিখিত স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, জানতে চাইলে ডিএসইর লোকজন জোর করে তাঁর কাছ থেকে এ স্বীকারোক্তি আদায় করেছেন বলে তিনি দাবি করেন। নূর ইসলাম জানান, তিনি বর্তমানে কোম্পানি সচিবের দায়িত্বে নেই। তবে কোম্পানির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে।
মূল্য সংবেদনশীল তথ্য-প্রতারণা: ২০০৯ সালের ১২ এপ্রিল কোম্পানির পক্ষ থেকে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করে জানানো হয়, পরিচালনা পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোম্পানি সমুদ্রগামী চারটি ট্রলার কিনবে, যা মাছ ধরা, প্রক্রিয়াজাত করা ও রপ্তানির কাজে ব্যবহার করা হবে। এমন তথ্য প্রকাশের পরদিন ১৩ এপ্রিল ডিএসই কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন স্থগিত করে দেয়। চারটি সমুদ্রগামী ট্রলার কেনার বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়ে কোম্পানিকে চিঠি দেয় ডিএসই। চিঠির জবাবে ২৭ এপ্রিল কোম্পানি জানায়, চারটি ট্রলার কিনতে ৬০ কোটি টাকা খরচ হবে। এ জন্য কৃষি ব্যাংকে ঋণ আবেদন করা হয়েছে, যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ওই দিনই ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, কোম্পানির প্রায় ১০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রয়েছে, যার কারণে কোম্পানিটিকে নতুন করে চারটি ট্রলার কেনার ঋণের অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
এ ছাড়া কোম্পানি সচিব নূর ইসলাম এক চিঠি দিয়ে ডিএসইকে জানান, দেশের শীর্ষস্থানীয় চিংড়ি ও মাছ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মেঘনা সি ফুডস লিমিটেড ও তার দুটি কারখানা অধিগ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহযোগিতায় বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের প্রাথমিক প্রস্তুতিও কোম্পানি শুরু করেছে। যদিও এসব ব্যবসায়িক পরিকল্পনার বিষয়ে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় কোনো ধরনের আলোচনাই হয়নি। কোম্পানিটির এসব তথ্য ডিএসই কর্তৃপক্ষ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেনি।
কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে নূর ইসলাম জানান, তিনি দেশের বাইরে রয়েছেন। আর চেয়ারম্যানকে টেলিফোনে পাওয়া যায়নি।
এসব মূল্য সংবেদনশীল তথ্য শেয়ারের দর বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে। শেয়ারটির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখতে ২০০৯ সালের ২৩ এপ্রিল এসইসিও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। দাম বাড়ানোর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ডিএসইর সদস্য ব্রোকারেজ হাউস আরাফাত সিকিউরিটিজ, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এবং অনুমোদিত প্রতিনিধি মজিবুর রহমানকে পৃথকভাবে মোট ৫১ লাখ টাকা জরিমানা করে এসইসি।
২০০৬ ও ২০০৭ সালে কোম্পানিটি কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। অথচ পরের তিন বছর যথাক্রমে ১০, ১২ এবং ১৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করা হয়।

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More