Feedjit Live

Sunday, July 24, 2011

এত চিনি গেল কোথায়?

চট্টগ্রাম বন্দরে এক সপ্তাহ আগে এমভি পিলিয়ন জাহাজ থেকে খালাস হয়েছে সিটি গ্রুপের ৫২ হাজার ৪০০ টন অপরিশোধিত চিনি।
দেশবন্ধু ও আবদুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেডের আমদানি করা ৫৩ হাজার টন অপরিশোধিত চিনি খালাস করে নেওয়া হচ্ছে পরিশোধন কারখানায়।
রোজার আগ মুহূর্তে এই তিন কোম্পানিই এনেছে এক লাখ পাঁচ হাজার টন চিনি।
অন্যদিকে ক্ষমতা বাড়ানোর পর দুই দিন আগে থেকে উৎপাদন শুরু করেছে এস আলম রিফাইনারিও। এই কোম্পানির আগের ছয় থেকে সাত হাজার টনের অপরিশোধিত চিনির মজুদ দিয়ে উৎপাদন শুরু করেছে। চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের হাতে আছে ৫৩ হাজার টন।
অর্থাৎ সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে এখন এক লাখ ৬৩ হাজার টন চিনির মজুদ আছে। আর তাই প্রশ্ন উঠেছে, এত চিনি কোথায় গেল?
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এস আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ লাবু প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের রিফাইনারির ক্ষমতা বাড়ানোর কারণে এতদিন চিনি উৎপাদন বন্ধ ছিল। তবে দুই দিন আগে থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছে। পাইপলাইনে চিনি বন্দরে আসার পথে রয়েছে। ফলে রোজার সময় চিনির সংকট হবে না।’
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এ বছরের শুরুতে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে চিনি আমদানি হয় সবচেয়ে কম। পরিশোধন কারখানার মালিকেরা এ সময় চিনি আমদানি করেননি।
এর আগে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে বেশি চিনি আমদানি হওয়ায় সংকট প্রকট হয়নি। গত মার্চ মাস থেকে চিনি আমদানি শুরু হয়। গত চার মাসে (মার্চ থেকে জুন) চিনি আমদানি হয় চার লাখ ৪৫ হাজার ৪২৭ টন। এ মাসে এসেছে এক লাখ পাঁচ হাজার টন।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে সিটি গ্রুপের ৫২ হাজার ৪০০ টন চিনি খালাস করা হয়েছে। এসব চিনি এখন পরিশোধন করে বাজারজাত করা হচ্ছে।
দেশবন্ধু সুগার রিফাইনারির আমদানি করা ২৭ হাজার টন চিনির মধ্যে খালাস হয়েছে ১৩ হাজার ৫৫০ টন।
এ ছাড়া আবদুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেডেরও ২৬ হাজার টন চিনির মধ্যে ৪৫০ টন খালাস হয়েছে।
বৃষ্টির কারণে এই দুটি জাহাজ থেকে কয়েক দিন চিনি খালাস করা যায়নি। তবে গতকাল শনিবার থেকে দুটি জাহাজ থেকে আবার চিনি খালাস শুরু হয়েছে বলে জাহাজ কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
কাস্টম হাউসের নথিপত্রে দেখা গেছে, সর্বশেষ চালানের এসব অপরিশোধিত চিনির দাম পড়ছে কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৫১ টাকায়।
যেমন, ব্রাজিল থেকে আবদুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেড ২৬ হাজার টন চিনি আমদানি করেছে। এই চিনির কেজিপ্রতি দাম পড়েছে ৫০ টাকা ৮৬ পয়সা।
এই দামের সঙ্গে চিনি খালাসের নানা প্রক্রিয়ার খরচ এবং পরিশোধন খরচ মিলে কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে ছয় টাকা ধরা হলে খরচসহ প্রতি কেজি চিনির মূল্য পড়ে ৫৬ থেকে ৫৭ টাকা। খুচরা বাজারে এই চিনিই বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭১ টাকায়।
চিনি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ছয়টি চিনি পরিশোধন কারখানার মধ্যে চারটি বন্ধ থাকায় চিনির সরবরাহ কমে যায়। বাড়তি চাহিদার বিপরীতে কম সরবরাহকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে বন্ধ কারখানাগুলো চালু হচ্ছে। এতে অন্তত রোজার সময় সংকট হবে না বলে ব্যবসায়ীরা আশ্বস্ত করেছেন।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকার চিনির দর ৬৫ টাকা নির্ধারণ করার পর খুচরা ব্যবসায়ীরা চিনি বিক্রিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ৬৮ টাকা। এই দরে চিনি এনে ৬৫ টাকায় বিক্রি না করলে আবার তদারকি দলের মুখে পড়তে হবে। এ কারণে অনেকে চিনি কিনলেও ভয়ে বিক্রি করছেন না।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের হাতে থাকা ৫৩ হাজার টন চিনি এখনই খোলা বাজারে বিক্রি করা উচিত। এতে চিনির বাজার স্থিতিশীল হবে।প্রথম আলো

0 comments:

Post a Comment

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More