এতে দেখা যায়, সদ্য সমাপ্ত ২০১০-১১ অর্থবছরে দেশে পণ্য রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২৯২ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। আর ২০০৫-০৬ অর্থবছরে দেশে রপ্তানি আয়ের মোট পরিমাণ ছিল এক হাজার ৫২ কোটি ৬২ লাখ ডলার।
আবার গত অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি আয় তার আগের ২০০৯-১০ অর্থবছরের তুলনায় সাড়ে ৪১ শতাংশ হারে বেড়েছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৬২০ কোটি ৪৬ লাখ ডলার।
গত অর্থবছরের মোট রপ্তানি আয় বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রাকেও উল্লেখযোগ্য হারে ছাড়িয়ে গেছে। ২০১০-১১ অর্থবছরের জন্য যেখানে বার্ষিক রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, সেখানে প্রকৃত রপ্তানি আয় তার চেয়ে প্রায় ২৪ শতাংশ বেশি হয়েছে।
ইপিবির পরিসংখ্যান থেকে আরও দেখা যায়, আলোচ্য বছর রপ্তানি আয়ের শীর্ষে আছে নিট পোশাক রপ্তানি। এ সময় নিট পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৯৪৮ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা তার আগের বছরের চেয়ে ৪৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও এ আয় প্রায় ৩৩ শতাংশ বেশি।
যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) অন্যতম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, বিগত বিশ্বমন্দার সময় বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানিকারকেরা অনেক ক্ষেত্রে লোকসান দিয়ে হলেও নিয়মিত ক্রেতাদের ধরে রেখেছিলেন। মন্দা কাটিয়ে উন্নত বিশ্বে চাহিদা জোরদার হওয়ায় ক্রেতারা তাই বড় আকারে কার্যাদেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি চীনের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হওয়ায় সেখানে শ্রমের মজুরি বেড়েছে। ফলে চীন থেকেও কিছু কার্যাদেশ বাংলাদেশের দিকে ধাবিত হয়েছে।
মোহাম্মদ হাতেম আরও বলেন, ‘রপ্তানির এই গতিময়তা ধরে রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা খুবই জরুরি। তাই সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আমাদের আহ্বান, তারা যেন হরতালের মতো কর্মসূচি দেওয়া থেকে বিরত থাকে।’
বিকেএমইএর সহসভাপতি এও বলেন, সরকারের কাছে তাঁদের প্রধান দাবি গ্যাস-বিদ্যুৎ তথা জ্বালানি সমস্যার উত্তরণ ঘটানো। না হলে উৎপাদন ব্যয় আরও বাড়বে আর রপ্তানির গতিময়তা ধরে রাখা যাবে না।
রপ্তানি আয়ের দ্বিতীয় স্থানে আছে ওভেন পোশাক। ওভেন পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৮৪৩ কোটি ২৪ লাখ ডলার, যা তার আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪০ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে ২৭ শতাংশ বেশি।
পাট ও পাটজাত পণ্য দেশের রপ্তানি আয়ের তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে। আলোচ্য বছর পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি থেকে মোট আয় হয়েছে ১১১ কোটি ৪৯ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে সাড়ে ৪১ শতাংশ বেশি। তবে মোট আয় বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা ১১১ কোটি ৫৪ লাখ ডলার থেকে সামান্য নিচে রয়েছে।
পাট ও পাটজাত পণ্যের মধ্যে কাঁচা পাট রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩৫ কোটি ৭৩ লাখ ডলার, পাট-সুতা ও টোয়াইন থেকে ৫০ কোটি ডলার এবং পাটের থলে-ছালা থেকে ২০ কোটি ৬৭ লাখ ডলার।
এ ছাড়া ১০ কোটি ডলারের ওপরে কিন্তু ১০০ কোটি ডলারের নিচে রপ্তানি আয়—এমন পণ্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হোম টেক্সটাইল (৭৮ কোটি ৮৭ লাখ ডলার), হিমায়িত খাদ্য (৬২ কোটি ৫০ লাখ ডলার) এবং পাদুকাসামগ্রী ও চামড়া (উভয়ই ২৯ কোটি ৭৮ লাখ ডলার)।
0 comments:
Post a Comment